"পাঠক,পাঠিকাদের মতামত বা মন্তব্যই তো লেখকদের লেখিকাদের পুনরায় লিখিবার একমাত্র প্রেরণা। তাই দয়া করিয়া মতামত দিতে ভুলিবেন না, তা সে যেমনই হউক না কেন ।" http://tobey-shono.blogspot.com

Friday, June 14, 2013

কি জ্বালা

সংসারের ভেলায় ভাসমান গোবর্ধন বাবুর অবস্থা বিশেষ ভালো নয়। সংসারের ভার সামলাইতে তো কাহিল অবস্থা বহুদিন যাবৎ। বাবা নীলমণি, অর্থাৎ তাহার পুত্র একটু, একটু করিয়া একটি উড়ন্ত ফুলবাবু হইয়া উঠিয়াছে। ফুলের রেণু খুঁজিতেছে কিনা বলা যাইতেছে না। আর তাহার কন্যারত্নটি এক্ষণে মাঝে মধ্যে মধুবনে বেড়াইতে চাহে। তাহার স্ত্রী অবলা দেবী সংসার ব্যতীত আর চতুর্দিকেরই খোঁজ রাখেন। বুঝা যাইতেছে অবলা দেবীর প্রশ্রয়তেই পুত্র ও কন্যা দুইজনই গোল্লায় যাইতে বসিয়াছে। গোবর্ধন বাবুর মতে তাহাকে গলায় দড়ি আঁটিয়া মাঠে খোঁটার সহিত বাঁধিয়া দিয়া আসিতে হয়। ব্যাপারটি কতকটা এইরকম - খা, কত ঘাস খাবি খা। ছাগলের আর অন্য কি কাজ? কোথা হইতে এমন উপাদেয় একটি সংসারের ব্যবস্থা করিয়া নিজের ক্রমবর্ধমান শিরঃপীড়াটি ডাকিয়া আনিলেন গোবর্ধন বাবু তাহা তিনি নিজেও বুঝিতে পারেন না। বলিতে হয় ওনাকে কুকুরে নয়, বোধকরি ছাগলে কামড়াইয়াছিল।

গোবর্ধন বাবুর বক্তব্য, পুত্র, কন্যা ও তাহাদের মাতা তাহাকে খোলা বাজারে বেচিয়া দিবার মতলব করিতেছে। ইহা তিনি পাড়ার নগেন মুদির কাছে ব্যক্ত করিয়াছেন। কথাটি বিশ্লেষণ করিলে যাহা দাঁড়ায় তাহা হইলো তিনজনে মিলিয়া গোবর্ধন বাবুকে অবলম্বনহীন করিবার বিপুল প্রচেষ্টা চালাইতেছে। এই বিষয়ে তিনি আরও বলিয়াছেন যে যাহা কোনোদিন কিনিতেই পারিল না তাহার স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা, তাহা তাহারা বেচিবে কোন এক্তিয়ারে? তবে এ ভুল তারা করিবে না ইহা হলপ করিয়া কওয়া যায়। তিনি এক্ষণে তার পরিবারকে একপ্রকার এড়াইয়াই চলেন। এই বিষয়ে তার বক্তব্য ছুঁচাকে লাঠি দিয়া মারিলেও গন্ধটা হাতেই হইয়া থাকে। তা তিনি চাহেন না। নিজের উপার্জনের কর্মটুকু রক্ষা করিয়া বাকি সময় নিরুত্তাপ, নিরুদ্বেগ হইয়া থাকাই তিনি সমীচীন মনে করেন। এবং তাহার পরিবারকে আচরণের দ্বারা বুঝাইবার চেষ্টা করিতেছেন সে তাহারা যেন গোবর্ধন বাবুর সহিত বেশী ঘন হইবার প্রচেষ্টা হইতে বিরত থাকে।

এমন কত গোবর্ধন বাবু আছে জগতে তাহা কে আর কহিতে পারে।

No comments:

Post a Comment

অনুগ্রহ করে আপনার ব্ক্তব্য এইখানে অবশ্যই লিখুন......

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...