"পাঠক,পাঠিকাদের মতামত বা মন্তব্যই তো লেখকদের লেখিকাদের পুনরায় লিখিবার একমাত্র প্রেরণা। তাই দয়া করিয়া মতামত দিতে ভুলিবেন না, তা সে যেমনই হউক না কেন ।" http://tobey-shono.blogspot.com

Thursday, May 30, 2013

সৃষ্টির লীলা ও অগ্রগতির মূল

প্রতিটি নূতন আবিষ্কার আমাদের সামনে নূতন বিস্তীর্ণ দিগন্ত খুলিয়া দিতেছে প্রতিনিয়ত। সেই দিগন্তের দিকে ভালো করিয়া না চাহিয়া আমরা সামান্য জ্ঞান লইয়া সুখনিদ্রার আয়োজন করিতেছি। ভাবিতেছি, যা জানিয়াছি এই তো অনেক। ইহার অধিক জানিবার, দেখিবার আর কি আছে? অচিরেই আমি আমার ঘটি, বাটি, ছাতা, লাঠি ও চার দেওয়ালের বন্ধন লইয়া হাঁপাইয়া উঠিলাম। পুরাতন সকল কিছুর মধ্যে মন নিরানন্দ হইয়া পরিল।

হঠাৎ  কানে আসিয়া কে যেন কয়টি মন্ত্র কহিয়া গেলো, আর আমার নিদ্রা পলায়ন করিল তৎক্ষণাৎ। এই সেই জ্ঞান সমুদ্রের আনন্দ তরঙ্গ। এইখানে আনন্দ সুখকে বর্জন করিয়া, নিদ্রাকে জয় করিয়া জ্ঞান সমুদ্রে সন্তরণের জন্য সদা আহ্বান করিতে থাকে আমাদিগকে। নূতনের গন্ধ পাইলেই মনুষ্য হৃদয় চঞ্চল হইয়া উঠে। আর সে শুইয়া থাকিতে পারে না, নিদ্রা যাইতে পারে না। বাহির হইয়া পরে পথে। অজানাকে জানিবার আকর্ষণ তাহাকে সদাই ব্যস্ত রাখিয়াছে, এবং রাখিবেও। তখন দুঃখও আর দুঃখ দিতে পারে না, সে তখন কেবল জাগায় আমদের মনুষ্যত্ব। মনুষ্যত্বের বহু ধর্মের মধ্যে একটি হইলো তার জ্ঞানের আহরণের পিপাসা। দুঃখ কেবলই বলিতে থাকে, তুমি মানুষ, সুখ তোমার জন্য নয়। উত্থিত হও, জাগ্রত হও। সামনে যে বিস্তীর্ণ ভূমি পাইলে তাহা ভালো করিয়া নাড়িয়া, চাড়িয়া দেখো। আরও নূতন, নূতন দিগন্তের সন্ধান করো। নিজেকে ব্যাপ্ত করো। গ্রহ হইতে গ্রহান্তরে যাইবার আয়োজন করো।

তবেই তো কোটি, কোটি বৎসর ব্যাপী এই সৃষ্টির লীলা অর্থবাহী হইয়া উঠে। তুমিই সেই মানবসন্তান যার নিমিত্ত এই পৃথিবীর সৃষ্টি, হয়ত বা এই ব্রহ্মাণ্ডেরই সৃষ্টি।

ময়ূরের গায়ের পালকে ঈশ্বর নানান রঙ লাগাইয়া দিয়াছেন নিজেই। এমন আরও অনেক পশুপক্ষী আছে। কিন্তু মানুষের গায়ে তেমন বিচিত্র রঙ না দিয়া তিনি মানুষকে দিয়াছেন রঙ ও তুলি। মানুষ তার ইচ্ছামত যাহাতে রঙ লাগাইতে পারে। ঈশ্বর দেখিতে চান মানুষ তার মগজ খাটাইয়া কেমন রঙ লাগাইতে পারে। ইহাই প্রকৃতরূপে ঈশ্বরের খেলা। তিনি সদা, সর্বদা এই খেলা দেখিতেছেন ও সর্বানুভূ এবং আনন্দময় হইয়া আছেন। সেই সদা আনন্দময় পরমাত্মার সহিত যোগাযোগ রাখিয়া আমাদের আত্মাকে আনন্দময় রাখিবার উপায়ই হইলো সুখ ও দুঃখের সাগর পার হইয়া জ্ঞান সমুদ্রে সন্তরণ দেওয়া। জানিও জ্ঞান সমুদ্রের প্রতিটি তরঙ্গে শুধুই আনন্দ বিরাজ করিতেছে।

মানব সভ্যতার অগ্রগতি এইভাবেই ঘটিয়াছে, এবং ঘটিতে থাকিবে। তবে না যেন আমরা কভু ঈশ্বরকে তথা প্রকৃতিকে অতিক্রম বা লঙ্ঘন করিবার চেষ্টা করি। অখণ্ডতাকে আশ্রয় করিয়া কি করিয়া একত্রে আগাইয়া যাইতে হয় তার সকল নির্দেশ ওই জ্ঞান সমুদ্রেরই অতলে রহিয়াছে। ইহা একবার আহরণ করিয়া আনিতে পারিলেই মানুষের সকল কর্ম সদা মঙ্গলময় হইবে। ইহা এক অতি কঠিন কর্ম। তবু মানুষকে ইহা একদিন সম্পন্ন করিতেই হইবে।

No comments:

Post a Comment

অনুগ্রহ করে আপনার ব্ক্তব্য এইখানে অবশ্যই লিখুন......

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...